সাবেকডাঙ্গা পূরাকীর্তি - বাগেরহাট - Sabek Danga Monument - Bagerhat

 

সাবেকডাঙ্গা পূরাকীর্তি

সাবেকডাঙ্গা মনুমেন্ট স্থানীয়ভাবে অনেকে সাবেকডাঙ্গা মসজিদ বা সাবেকডাঙ্গা নামাজঘর ও বলে থাকে। এটি ইউনেস্কো কর্তৃক ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট) এর অন্তর্ভুক্ত। প্রাচীন চৌচালা রীতিতে স্থাপিত এটিই একমাত্র নিদর্শন যা এখনো বাংলাদেশে টিকে আছে।


খান জাহানের সমাধি থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার উত্তরে কাড়াপাড়া ইউনিয়নের সাবেকডাঙ্গা গ্রামে অবস্থিত এই পূরাকীর্তিটি। ষাট গম্বুজ মসজিদ থেকে যা ৬ কিলোমিটারের কাছাকাছি। এটি পঞ্চদশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে তৈরি করা বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। ধারনা করা হয় এটি হযরত খান জাহান আলী'র সময়ের অল্পকিছু পরে স্থাপিত। তবে প্রচলিত জনশ্রুতি মতে, এটি হযরত খান জাহান আলী'র ইবাদতঘর বা নামাজঘর।


এই প্রাচীন স্থাপনাকে ঘিরে রয়েছে অনেক বিতর্ক। জনশ্রুতি মতে এটিকে খান জাহান আলী'র ইবাদতঘর হিসেবে পাওয়া গেলেও শুরুতে এটি যে মসজিদ ছিলো না তা প্রত্নতত্ত্ববিদদের কাছে প্রমাণিত। কিছু কিছু প্রত্নতত্ত্ববিদ বলেছেন বরং স্থাপত্যশৈলী থেকে এটিকে মন্দির হিসেবে ধারনা হয়। তবে ১৯৯৩ সালে করা একটি গবেষণা থেকে জানা যায় এটি ইবাদতখানা হিসেবে ব্যবহৃত হতো, মন্দির কিংবা মসজিদ কোনটিই নয়।

নির্মাণশৈলী

একটি আয়তকার ভূমি কল্পনা করে মূল স্থাপনাটি গড়ে উঠেছে। বাইরের দিকে এর দৈর্ঘ্য উত্তর- দক্ষিণে ৭.৮৮ মিটার এবং প্রস্থ পূর্ব-পশ্চিমে ৫.১০ মিটার করে। দেয়ালের পুরুত্ব ১.৪৭ মিটার। এর প্রবেশপথ দক্ষিণ দিকে। মূল স্থাপনায় এছাড়া আর কোন দরজা বা জানালা ছিল না। মনুমেন্টটি তৈরি করতে লাল ইটের ব্যবহার করা হয়েছে। এর কার্নিশ গুলো বাঁকা অনেকটা ধনুকের মতো আর চৌচালা ছাদ। গ্রামীণ দোচালা কুঁড়ে ঘরের মতো। ভিতরের দেয়ালে পোড়ামাটির ফুল আর লতা-পাতার কারুকাজ করা। এই স্থাপনাতে দিল্লি'র তুঘলকি স্থাপত্য আর সাধারন বাঙালি স্থাপত্যের একটা মিশেল দেখা যায়।

সংরক্ষণ

১৯৮৫ সালে এটি বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান হিসেবে তালিকাবদ্ধ হয়। এরপর বাগেরহাটের অন্যান্য স্থাপনার সংগে সাবেকডাংগা মনুমেন্ট সংস্কার ও সংরক্ষনের জন্য কয়েক দফায় কাজ শুরু হয়। সরকার এবং দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞের নের্তৃত্বে ২০০২ সাল পর্যন্ত কাজ চলে।বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনকে সংরক্ষিত ঘোষণা করেছে।

কিভাবে যাওয়া যায়

বাগেরহাট জেলা বাস স্ট্যান্ড থেকে মাইক্রোবাস, সিএনজি, ইজিবাইক/ অটোরিক্সা যোগে সাবেকডাঙ্গা যাওয়া যায়। ষাটগম্বুজ রেলওয়ে স্টেশন থেকে সামান্য দক্ষিনে এর অবস্থান।

 

ফটোগ্যালারী

Post a Comment

Previous Post Next Post