হাড়

আলাউদ্দীন আল আজাদ

 


লাল পলাশের ভস্মস্তূপে কিসের জ্বালা

স্তব্ধ অধীর বজ্রগর্ভ মেঘের মতো?

শিবির-সীমায় মনের ছায়ায় ইতস্তত

ছড়ায় সে তার কূট-মন্ত্রণা ঘৃণায় ঢালা

দুই শতকের সেই একদিন মনে কি পড়ে?

মিরজাফরের গুলির শিখায়, সমুদ্ধত

নিভলো তোমার দিনের সূর্য দিগন্তরে

দূর গোধূলির সেই একদিন মনে কি পড়ে

মনে কি পড়ে?

নিভলো তোমার ঘরের প্রদীপ পথের বাতি

নিভলো সহসা মহাশূন্যের লক্ষ তারা

কালো রাত্রির যাত্রিক হলে, লক্ষ্যহারা

সড়কে সড়কে ঝড়-ঝঞ্ঝাই তোমার সাথি।

সমুখে কোথাও এমন সে দেশ আছে কি ভাই

যেখানে আলোর সম্ভারে হাসে বসুন্ধরা?

স্বদেশ আমার চক্র-রাতের মুঠোয় ভরা

গ্রাম জনপদ কাঁপে বর্গীর অশ্বখুরে

সোনার শস্য পোড়ে ছারখার; দৃষ্টি পুড়ে

হলো সঙ্গীন, তাই নেই আর অশ্রুঝরা

টোটায় ঝরে

অযুত প্রাণের অগ্নিশিখার সূর্য-কুঁড়ি

ফৌজের হাঁকে কাঁপে থরথর দস্যুপুরী

নিমেষে ছড়ায় তারই আওয়াজ দিগন্তরে

মনে কি পড়ে?

রক্ত ঝরে

অগিড়বর মতো বাঁশের কেল্লা বেদির পরে

রক্ত ঝরাই ফাঁসির মঞ্চে দ্বীপান্তরে

ঝরেছে সকল রক্ত। এখন কখানা হাড়ে

ঝকঝক করে তীব্র তীক্ষ্ণ বর্শা-ফলা

নতুন দস্যু আসে যদি, দেশ দেবোনা তারে

ইস্পাত-হাড়ে গড়েছি বজ্র বহ্নি-জ্বালা॥

Post a Comment

Previous Post Next Post