তিতাস

আল মাহমুদ

 


এ আমার শৈশবের নদী, এই জলের প্রহার

সারাদিন তীর ভাঙে, পাক খায়, ঘোলা স্রোত টানে

যৌবনের প্রতীকের মতো অসংখ্য নৌকার পালে

গতির প্রবাহ হানে। মাটির কলসে জল ভরে

ঘরে ফিরে সলিমের বউ তার ভিজে দুটি পায়।

অদূরের বিল থেকে পানকৌড়ি, মাছরাঙা, বক

পাখায় জলের ফোঁটা ফেলে দিয়ে উড়ে যায় দূরে ;

জনপদে কি অধীর কোলাহল মায়াবী এ নদী

এনেছে স্রোতের মতো, আমি তার খুঁজিনি কিছুই।

কিছুই খুঁজিনি আমি, যতবার এসেছি এ তীরে

নীরব তৃপ্তির জন্য আনমনে বসে থেকে ঘাসে

নির্মল বাতাস টেনে বহুক্ষণ ভরেছি এ বুক।

একটি কাশের ফুল তারপর আঙুলে আমার

ছিঁড়ে নিয়ে এই পথে হেঁটে চলে গেছি। শহরের

শেষ প্রান্তে যেখানে আমার ঘর, নরম বিছানা,

সেখানে রেখেছি দেহ। অবসাদে ঘুম নেমে এলে

আবার দেখেছি সেই ঝিকিমিকি শবরী তিতাস

কি গভীর জলধারা ছড়ালো সে হৃদয়ে আমার।

সোনার বৈঠার ঘায়ে পবনের নাও যেন আমি

বেয়ে নিয়ে চলি একা অলৌকিক যৌবনের দেশে। 

Post a Comment

Previous Post Next Post