তারাফুল লেখকঃ আব্দুল্লাহ মাহমুদ নজীব


[#পাঠপ্রতিক্রিয়া]

বই : তারাফুল
লেখক : আব্দুল্লাহ মাহমুদ নজীব
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৫৩
প্রকাশনী : সমকালীন
.
লিখেছেন - প্রিয় ভাই Jaber Mustafa Amin
............

'তারাফুল' লেখকের আরেকটি প্রবন্ধগল্পের বই। প্রথমত এর কন্টেন্ট নিয়ে বলা যাক। এখানে লেখক ইসলামী নানান শিক্ষার কথা ব্যবহারিকভাবে তুলে ধরেছেন। ইসলামী শিক্ষাগুলোর যে আমরা কী পরিমাণ মুখাপেক্ষী, এসবের পেছনে যে মানসিক ব্যাপারগুলো কাজ করে, ভালোবাসার মাপকাঠি দিয়ে ইসলামী রীতিনীতিগুলো মাপলে যে সেগুলো মানা আমাদের পক্ষে শুধু সহজ হয় না বরং বেশ উপভোগ্য হয় — এসবই যেন লেখকের একেকটি প্রবন্ধে প্রতীয়মান হয়েছে। একজন মুসলিম হিসেবে শিশুকে যথাযথভাবে গড়ে তোলার জন্যে গার্ডিয়ান যেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেন তার এক অভিনব পাঠ গার্ডিয়ানরা পাবেন বলে বিশ্বাস করি। যাপিত জীবনের নানান চড়াই-উতরাই পার করা একজন মুসলিম কীভাবে তাঁর রবের কাছে ধরনা দিতে পারেন, কীভাবে তাঁর হৃদয়-বাগিচায় রাসূল (সাঃ)-কে স্হান দিতে পারেন — এসব নিয়ে পাঠক ভাবতে বাধ্য হবেন। লেখকের বারবার শৈশবকে ধারণ করার সুতীব্র ইচ্ছাগুলোও সংক্রামক হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
.
এই বইয়ের ব্যাপারে আলাদা করে বলার মতো অনেক কিছুই আছে। লেখক নিজে একজন কবি এবং কবিতানুরাগী হওয়ায় এখানে নানান সময়ে আরবি, ইংরেজি কিংবা বাংলা কবিতার সরব উপস্থিতি লক্ষণীয়। বিদেশি কবিতার ব্যাপারে ভয়ের সুযোগ নেই। কেননা লেখকের করা কাব্যিক অনুবাদগুলোও বেশ উপভোগ্য। এছাড়াও আরেক বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখ না করলে বোধ করি লেখক এবং বইয়ের ব্যাপারে অন্যায় হয়ে যাবে। তা হচ্ছে লেখকের ভাষা শৈলী। এই ব্যাপারে আমি বলার যোগ্যতা রাখি না। তবে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠায় লেখক যেভাবে মুহুর্মুহু অনুপ্রাস ব্যবহার করেছেন, একেকটা বাক্যের যে নিখুঁত গাঁথুনি, প্রতিটা শব্দের সাথে লেখকের যে পরিমাণ দরদ মিশে আছে — খুব সম্ভবত এসব একজন পাঠকের দৃষ্টিগোচর এবং হৃদয়গোচর না হয়ে থাকতে পারবে না।
.
সর্বশেষ বই থেকে সামান্য কিছু লাইন তুলে ধরি —
" ক্যাম্পাসের অসুস্থ পরিবেশে প্রতিনিয়তই সুলাইমানের কথা মনে হয়। রুম থেকে বেরোলেই কে যেন কানে কানে বলে যায়, ' এই চোখ দিয়ে আল্লাহকে দেখতে হবে, এই চোখে কি হারাম কিছু দেখা যায়?' "

সমকালীন প্রকাশন

Post a Comment

Previous Post Next Post